Friday 23 December 2016

ইন্টারনেট সেমবার বাইরে ৯০ শতাংশের বিশ মানুষ ।



তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সহজ করতে অনেক ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা। অথচ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে এখনও ৯০ দশমিক ৪ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট সেবার বাইরে। অর্থাৎ মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতায় এসেছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) সাক্ষরতা, দক্ষতা এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা: বাংলাদেশে এসডিজি-৪শীর্ষক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
এতে দেখা গেছে, দেশে ৭৮ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও ৯৬ দশমিক ৯ ভাগ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করেন না। আর ৬২ দশমিক ১ ভাগ মানুষ টেলিভিশন দেখলেও ৬ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ রেডিও শোনেন।
সোমবার রাজধানীর এলজিআরডি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে পুরুষ ১৫ দশমিক ১ ভাগ ও নারী ৪ দশমিক ৮ ভাগ। এর মধ্যে গ্রামে ৭ দশমিক ৮ ভাগ ও শহর এলাকায় ১৭ দশমিক ১ ভাগ। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে পুরুষ ৮৩ দশমিক ৪ ভাগ ও নারী ৭৪ দশমিক ২ ভাগ। গ্রামীণ এলাকার ৭৭ দশমিক ১ ভাগ ও শহর এলাকার ৮৪ দশমিক ৪ ভাগ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন।
ক্যাম্পের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশের ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, একজন মানুষের ভালো ক্যারিয়ার গড়তে নতুন তথ্য ও জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে রেডিও শোনেন ৯ দশমিক ২ ভাগ পুরুষ ও ৪ দশমিক ৮ ভাগ নারী। এর মধ্যে গ্রাম এলাকায় ৬ শতাংশ ও শহর এলাকায় ৮ দশমিক ৯ ভাগ। টেলিভিশন দেখেন ৭০ দশমিক ৪ ভাগ পুরুষ আর ৫৫ শতাংশ নারী। এর মধ্যে গ্রাম পর্যায়ে ৫৭ দশমিক ৫ ভাগ ও শহরে ৮২ দশমিক ২ ভাগ।
সমীক্ষা অনুযায়ী, অতি ধনী শ্রেণির ৮৪ দশমিক ৪ ভাগ মোবাইল ফোন, ১০ দশমিক ৬ ভাগ কম্পিউটার, ১৮ দশমিক ৮ ভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ৮ দশমিক ৫ ভাগ রেডিও এবং ৭৭ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন। ধনী শ্রেণির ৮২ দশমিক ৬ ভাগ মোবাইল ফোন, দশমিক ১ ভাগ কম্পিউটার, ১২ দশমিক ৫ ভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ৭ দশমিক ৬ ভাগ রেডিও এবং ৭০ দশমিক ৫ ভাগ টেলিভিশন দেখেন। মধ্যবিত্তের ৮০ শতাংশ মোবাইল ফোন, ৩ শতাংশ কম্পিউটার, ৯ দশমিক ১ ভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ৭ শতাংশ রেডিও এবং ৬৩ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের মধ্যে ৭৭ দশমিক ৯ ভাগ মোবাইল ফোন, দশমিক ৫ ভাগ কম্পিউটার, দশমিক ৪ ভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ৪ দশমিক ৪ ভাগ রেডিও এবং ৫৯ দশমিক ৬ ভাগ টেলিভিশন দেখেন। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৯০ দশমিক ২ ভাগ মোবাইল ফোন, ২ দশমিক ২ ভাগ কম্পিউটার, ৬ দশমিক ২ ভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ৬ দশমিক ৯ ভাগ রেডিও এবং ৬৭ দশমিক ৩ ভাগ টেলিভিশন দেখেন। অষ্টম থেকে নবম শ্রেণির ৯৬ দশমিক ৩ ভাগ মোবাইল ফোন, ৫ শতাংশ কম্পিউটার, ১৪ দশমিক ৩ ভাগ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ৯ দশমিক ৮ ভাগ রেডিও এবং ৭২ দশমিক ৮ ভাগ টেলিভিশন দেখেন। দশম শ্রেণির ওপরের ৯৭ দশমিক ৮ ভাগ মোবাইল ফোন, ১৮ দশমিক ৪ ভাগ কম্পিউটার, ৩৭ দশমিক ৫ ভাগ ইন্টারনেট ব্র্যাউজিং, ১৪ দশমিক ৬ ভাগ রেডিও এবং ৭৯ দশমিক ১ ভাগ টেলিভিশন দেখেন।
ক্যাম্পের কর্মকর্তারা জানান, গত ১২ মে থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত এ সমীক্ষা চালানো হয়। দেশব্যাপী লিঙ্গ ও বয়স বিবেচনায় নিয়ে ব্যক্তিভিত্তিক নমুনার মাধ্যমে চালানো হয় এ সমীক্ষা। এটি চালানো হয় ১১ হাজার ২৮০ ব্যক্তির মধ্যে। নমুনার মধ্যে সাড়ে ৫৩ শতাংশই নারী।
গণসাক্ষরতা অভিযানের চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের প্রতিনিধি মারিও রনচি, ইউনেস্কো বাংলাদেশের এডুকেশন প্রোগ্রাম বিশেষজ্ঞ সুন লি।
প্রতিবেদনটি সংক্ষেপে তুলে ধরেন এডুকেশন ওয়াচ স্টাডি ২০১৬-এর প্রধান গবেষক সমীররঞ্জন নাথ ও গণসাক্ষরতা অভিযানের সহসভাপতি ড. মনজুর আহমেদ।

No comments:

Post a Comment